ভোলা জেলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
- আপডেট সময় : ০৬:৫৮:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ভোলা জেলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে এই গ্যাসের পরিমাণ প্রায় ৫.১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। বিশেষজ্ঞদের মতে এই পরিমাণ গ্যাস দিয়ে সারাদেশের ১ বছরের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা যাবে। তাহলে এই পুরো গ্যাস দিয়ে বাংলাদেশ আরও ৫ বছর চলতে পারবে।
এছাড়াও ভোলা জেলার শাহবাজপুর ও ইলিশায় ২.৪২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং চরফ্যাশনে ২.৬৮৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট মজুদ গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এখন বর্হিবিশ্ব থেকে এলএনজি গ্যাস আমদানি করে সারাদেশে গ্যাসের চাহিদা পূরণ করছে। ভোক্তা পর্যায়ে এবং খোলা বাজারে প্রতি এমএমবিটিই এলএনজি এর দাম ১০.৪৬ মার্কিন ডলার।
সেই বাজার হিসেবে ৫.১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের আন্তর্জাতিক মূল্য দ্বারা প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
ভোলা জেলায় ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে যৌথ চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম। বিগত ৪ বছর ধরে তারা এই গ্যাস অনুসন্ধানের কাজটি চালিয়ে আসছে। ২০২০ সালে গবেষণাটি শুরু হলেও সেটি শেষ হয় চলতি বছরের জুন মাসে। গ্যাস অনুসন্ধানের গবেষণার পত্রটি ইতিমধ্য বাংলাদেশ জ্বালানি বিভাগ পেট্রোল বাংলা ও বাপেক্সে জমা দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভোলার শাহবাজপুর এলাকা থেকে ইলিশিয়া পর্যন্ত ৬০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গক জুড়ে থ্রিডি সিসমিক সার্ভে করা হয়েছে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য। এতে আরও ২.৪২৩ টিসিএস উত্তোলনযোগ্য প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কার করা হয়েছে। সেই সাথে ভোলা জেলার চরফ্যাশনে ১৫২.৬ লাইন কিলোমিটার জুড়ে টুডি সার্ভে করা হয় গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য এবং সেখানে ২.৬৮৬ টিসিএফ গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়।
ভোলা জেলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
রাশিয়ার ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের মুখপাত্র সাংবাদিকদের কে জানান, গ্যাস অনুসন্ধানের এই গবেষণাটি আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করা হয়েছে যেখানে সিসমিক ডাপা, অয়েল লক ডাটা, কোর ডাটা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ভোলায় আরো সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয় তিনি আরো বলেন এই কার্যক্রমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, সফটওয়্যার, কম্পিউটার, সিস্টেম এবং উন্নত মানের ল্যাব ব্যবহার করার ফলে তথ্য গুলো খুবই সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য। যার উপরে ভিত্তি করে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্প গুলি বাস্তবায়ন করা হলো দেশের গ্যাসের চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ করা সম্ভব।
এদিকে ভোলায় গ্যাসে অনুসন্ধানের ব্যাপারে পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান জনেনন্দ্রনাথ সরকার সাংবাদিকদের কে জানান, ভোলা জেলার এলাকা গুলি অনেক সম্ভাবনাময়। গবেষণার ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অনুসন্ধান কার্যক্রম চলে যাচ্ছি। ইতিমধ্য জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য ভোলা থেকে বরিশাল এবং খুলনায় গ্যাসের পাইপ লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একই সাথে এলএনজি এবং সিএনজির মাধ্যমেও ঢাকায় গ্যাস আনা হবে এবং খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পের জন্য একটি টেন্ডারও দেয়া হবে। এখন থেকে এই ধরনের সব কাজ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সম্পাদন করা হবে। সেই সাথে একাধিক কোম্পানিকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। এর আগে দেশের বাইরে থেকে যে এলএনজি গ্যাস আমদানি করা হতো কমিয়ে দেশীয় দেশের বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
ভোলায় গ্যাস খনির অনুসন্ধানের প্রতিবেদনে আরো বলা হয় বর্তমানে জেলা ভিত্তিতে মোট ৫ টি কূপ দিয়ে দৈনিক ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও ৪ টি কুপ খনন করে রাখা হচ্ছে যেগুলো থেকে পরবর্তীতে দৈনিক আরও ৮০ মিলিয়ন ঘসফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। এসকল কূপ ছাড়াও আরো ১৪ টি কূপের স্থান- ইতিমধ্য শনাক্ত করা হয়েছে। ভোলা জেলার গ্যাসের খনির এই কূপ গুলো থেকে ভবিষ্যতে আরো ২১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব।
অফিসার পদে ওয়েভ ফাউন্ডেশনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।